পৃথিবীর সেরা ১০ জন ব্যক্তি যারা প্রতি সেকেন্ডে লক্ষ টাকা আয় করে!
বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীর ধনী ১% মানুষের যত সম্পদ আছে তা পৃথিবীর বাকি ৯৯% মানুষের মোট সম্পদের চাইতেও বেশী। সাধারণ মানুষের মাঝে সেই ১ ভাগ মানুষদের নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই।
আসসালামু আলাইকুম viewers! চলে এসেছি আরো একটি নতুন blog নিয়ে।
আজকের এই Blog আমি দেখাতে চলেছি পৃথিবীর সেরা ১০ জন ধনী ব্যক্তি।যারা প্রতি মিনিটে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন এবং চাইলেই কিছু দেশকে বসিয়ে খাওয়াতে পারেন।
বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রতিবছর প্রকাশ করে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তির তালিকা। তেমনই দুইটি জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ফোর্বস(Forbes) এর “রিয়েল টাইম বিলিয়নিয়ার” এবং ব্লুম্বার্গের(Bloomberg) এর প্রকাশিত। আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক, সেই সব সিংহাসন এবং মুকুট বিহীন সম্রাটদের পরিচয় ও সম্পদের পরিমাণ।
এই তালিকার দশ নাম্বারে রয়েছেন-
১০। স্টিভ বল্মারঃ
Steve Ballmer
আমেরিকার মিশিগানে থাকা এই ব্যবসায়ী রয়েছেন ধনীদের তালিকায় দশম অবস্থানে আছেন ৯৮ বিলিয়ন সম্পদ নিয়ে। বিভিন্ন ব্যবসার সাথে সংযুক্ত থাকার পাশাপাশি তিনি মাইক্রোসফটের একজন ইনভেস্টর । তিনি মাইক্রোসফটে সাবেক CEO হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
৯। ল্যারি এলিসন
Larry Ellison
তার পুরো নাম লরেন্স জোসেফ এলিসন। তবে প্রযুক্তি বিশ্ব তাকে একনামে চেনে ল্যারি এলিসন হিসেবেই।ল্যারি এলিসন সফটওয়্যার কোম্পানি ওরাকলের নির্মাতা ও প্রাক্তন CEO। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১০১ বিলিয়ন। তার কোম্পানি অনেক সফটওয়্যার বানিয়ে বিশ্বকে টেকনোলজির দিক থেকে অনেক দূরে নিয়ে এসেছে।২০০৪ সালে কয়েক মাসের জন্য তিনি আমেরিকার সবথেকে বড় আবাসিক প্রকল্পের ডিলের রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন, তখনকার সময়ে Malibu ক্যালিফোর্নিয়াতে তিনি ৫টি বড় বড় আবাসিক প্রকল্প কিনে নেন প্রায় ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, আর এই পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তখন আর কোনো আবাসিক প্রকল্পে ডিল হয়ে থাকে নি! তবে তিনি এ রেকর্ডটি বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি। কয়েক মাস পর ৭০ মিলিয়ন মার্কিণ ডলারে আরেকটি আবাসিক প্রকল্পের ডিল হয়ে যাবার পর তার এই রেকর্ডটি ভেঙ্গে যায়!
তাছাড়া তার প্রতিষ্ঠিত ORACLE ডাটাবেজটি বর্তমানে প্রায় ৬৩টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষার জন্য পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে ব্রিটিশ ইংলিশ, আমেরিকান ইংলিশ সহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষায় ওরাকল পাওয়া যায় এখন! মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সি আই এর ডাটাবেজও এলিসনের তৈরি করা। তিনি একজন বড় মনের দাতাও বটে। তিনি পড়াশোনার উন্নতির জন্য কোটি কোটি টাকা দান করেছেন।
৮। ওয়ারেন বাফেট
Warren Buffett
ওয়ারেন বাফেট এই সময়ের একজন জনপ্রিয় উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও বক্তা।তাকে বিংশ শতকের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাফেট বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী।তিনি ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন।২০১১ সালে বাফেট বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি ছিলেন।২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘোষণা করে।তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১০৫ বিলিয়ন ডলার। তিনি মাত্র ১১ বছর বয়সে তার প্রথম বিনিয়োগ করেন। তার এখন ৬০ টিরও বেশী কোম্পানি রয়েছে।ওয়ারেন বাফেট সবার উদ্দেশ্য একটি মুল্যবান পরামর্শ দেন।তিনি বলেন , ভুলের রেকর্ড রাখুন, যাতে গড়বড়টা কোথায় হয়েছে তা বোঝা যায় এবং একই ভুলের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আবার ভুলের কথা সন্তান ও নাতি-নাতনিদের কাছেও বলা উচিত; যাতে তারা সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারে। ওয়ারেন বাফেট দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পক্ষপাতী। তিনি মনে করেন, শেয়ার কিনে ভুলে যাওয়াই শ্রেয়।
৭। সার্জি ব্রায়ান
Sergey Bryan
১১১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে সার্জি ব্রায়ান বিশ্বের সপ্তম শীর্ষ ধনী মানুষ। তিনি গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৫ সালে স্টেন ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা কালীন সময় বন্ধু ল্যারি পেজের সাথে মিলে প্রতিষ্ঠত করেন একটি ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন।সেই সার্চ ইঞ্জিন আজকে এলফাবেট প্রজেক্টের আন্ডারে “গুগল” নামে পরিচিত । এই প্রজেক্টে আরো রয়েছে ইউটিউব , জিমেইল, সহ আরো অনেক সেবা। তাছাড়া তাঁর প্রতিষ্ঠান গুগল পিক্সেল নামে মোবাইল ফোন লঞ্জ করে।
৬। ল্যারি পেজ
Larry Page
ল্যারি পেজ একজন আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং ইন্টারনেট উদ্যোক্তা। ১১৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে আছেন ধনীদের তালিকায় ৬ নাম্বারে । তাঁর প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছে যতটা পরিচিত তিনি ঠিক ততটাই আড়াল রেখেছেন নিজেকে।ক্যালিফরনিয়া নিবাসী এই তরুণ উদ্যোগতা তাঁর বন্ধুকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন আমাদের সবার পছন্দের “গুগল” । ১৯৯৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি এবং তাঁর বন্ধু সার্জি ব্রায়ন একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরির পরিকল্পনা করেন। ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি গুগলের CEO র দায়িত্ব পালন করেন।
৫। মার্ক জুকারবার্গ
জুকারবার্গ ফেসবুকের একজন উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩০ বিলিয়ন ডলার।একজন আমেরিকান কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার। তার পুরো নাম মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ, যার আসল পরিচিতি হলো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। তিনি ফেসবুকের চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নিয়ন্ত্রক অংশীদার। তিনি সৌর পাল মহাকাশযান উন্নয়ন প্রকল্প ব্রেকথ্রু স্টারশট এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ডের অন্যতম সদস্য হিসাবে কাজ করছেন।
২০১০ সাল থেকে টাইম ম্যাগাজিন বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব পুরষ্কারের অংশ হিসাবে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে জাকারবার্গের নাম ঘোষণা করেছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে জাকারবার্গ ফোর্বসের প্রকাশিত পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিদের তালিকায় দশম স্থানে ছিলেন। মার্ক জুকারবার্গ সবচেয়ে কম বয়সে বিলিয়নিয়ার হওয়া মানুষ দের মধ্যে একজন।তার কলেজের ক্যাম্পাসে ছোট পরিসরে তিনি ফেসবুক চালু করেন আজকে ফেসবুক বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হয়ে গিয়েছে।
৪। বিল গেটস
Bill Gates
বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪৮ বিলিয়ন ডলার নিয়ে আছেন শীর্ষ ধনীর তালিকায় চার নাম্বারে।টেকনোলজি বিপ্লবের প্রথম দিকে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনীর পদটি দখল করে ছিলেন অনেক দিন।এখনও সবচেয়ে ধনী মানুষের নাম আসলে সবার মুখে বিল গেটস এর নাম চলে আসে। ১৯৭৫ সালে বিল গেটস ও পল এলেন মাইক্রোসফট শুরু করেন। তিনি ২০১৪ সাল পর্যন্ত মাইক্রোসফটের ম্যানাজিং ডিরেক্টর পদে ছিলেন। এখন তিনি একজন বোর্ড মেম্বার হিসেবে আছেন। তিনি এখন অনেক রকম সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন।
৩। বার্নার্ড আর্নল্ট
Bernard Arnault
বিশ্বের সবথেকে ধনী মানুষদের তালিকায় ৩য় স্থানে আছেন ফ্রান্সের প্যারিস থাকা বিশ্বের খ্যাতনামা ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান লুই ভিটনের সি ই ও আর্নল্ট । তাঁর এবং পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬৯ বিলিয়ন ডলার।তাঁর আয়ের বিভিন্ন উৎস রহেছে এর মাঝে সিংহ ভাগ আসে কসমেটিক্স এবং ফ্যাশন নির্ভর ব্যাবসা থেকে। তিনি তার জীবনের প্রথমে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এরপর নিজের পরিবারের ব্যবসায় ডিরেক্টর পদে অংশগ্রহন করে আজকে বর্তমান পৃথিবীর সেরা ধনীদের একজন।
২। জেফ বেজোস
Jeff Bezos
বিল গেটসের একাধিকবার বিশ্বসেরা ধনীর হওয়ার মুকুটটি এবার কেড়ে নিল ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস। জেফ বেজোস শীর্ষ ধনী হওয়ার পাশাপাশি ইতিহাসের সব রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন। তিনি এখন বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ধনী। খবর আইএএনএসের।
বিশ্বের ২য় ধনী জেফ বেজোস, বয়স ৫৮ , আমেরিকার সিএটেল এর বাসিন্দা.পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ইকমার্স ওয়েবসাইট এমাজনের উদ্যোক্তা ও সিইও জেফ বেজোস কিছুদিন আগেও ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১৯৫ বিলিয়ন ডলার। আজকের ডলারের রেট অনুযায়ী ১ বিলিয়ন ডলার = ৮৪,৭৩৭,৫১০,০০০.০০ টাকা।এবার নিজে তার অর্থের পরিমাণ বের করে ফেলুন। জেফ এমাজন শুরু করেন তার বেডরুমে।
এমাজন প্রথমে একটা অনলাইন ভিত্তিক বই বিক্রির দোকান ছিল। আজকে সেখান থেকেই জেফ পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মানুষে পরিনত হয়েছেন। এমাজন ছাড়াও জেফ বেজোসের আয়ের উৎসের মধ্যে রয়েছে তার আরো দুইটি প্রতিষ্ঠান “ব্লু অরিজিন” এবং “দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট”।
জেফ এর আয়ের শুরুটা যেমন হয়েছে অনলাইন শপিং সাইট থেকে, তেমনি বাংলাদেশের বিভিন্ন তরুণ উদ্যোগতারা শুরু করেছেন বিভিন্ন অনলাইন শপিং সাইট।
১। ইলন মাস্ক
Elon Musk
আপনি যখনই এই ভিডিও টি দেখতে শুরু করেছিলেন তখনই আপনার মাথায় যে, প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছিল তা হচ্ছে বর্তমানে ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি কে? আপনার উত্তর হচ্ছে ইলন মাস্ক।বিশ্বের ধনী ব্যক্তির তালিকায় জেফ বেজোসকে পিছনে ফেলে কিছুদিন আগেই এক নাম্বারে উঠে এসেছেন ইলন মাস্ক।
৫০ বছর বয়সী এই দারুন প্রতিভাবান মানুষটি বর্তমানে রয়েছেন বিশ্বের সের ১০ ধনীর তালিকার ১ম নাম্বারে।আমাজনের মালিক জেফ বেজোসকে পেছনে ফেলে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক।তাঁর সম্পদের পরিমাণ ২২৯ বিলিয়ন ডলার। তিনি থাকেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে। ইলন মাস্কের আয়ের সিংহ ভাগই প্রযুক্তিখাতে। উল্লেখযোগ্য কম্পানী গুলো হচ্ছে টেসলা এবং স্পেসএক্স। বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্ব কিংবা কর্পোরেট জগত- যেটাই বলেন, ইলন মাস্ক এর মতো প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তিনি শুধু সফল ব্যবসায়ীই নন, বরং হালের তরুণদের আইকনে পরিণত হয়েছেন। অনেকে হয়তো টেসলা ও স্পেসএক্স এর কল্যাণে ইলন মাস্কের নাম জেনে থাকবেন।
কিন্তু টেসলা এবং স্পেসএক্স এর বাইরেও তার আরও অসাধারণ কিছু উদ্যোগ রয়েছে।বাংলাদেশের প্রেরণ করা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ও স্পেসএক্সের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হয়। অতি সম্প্রতি ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে তিনি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার কিনে নেন ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে।দারুন আশাবাদী এই উদ্যোগতা মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি নির্মানের চেষ্টায় আছেন । তিনি বলেন তাঁর জীবদ্দশায় তিনি যদি পৃথিবীর বাইরে মানব বসতি দেখে যেতে না পারেন তবে তা তাঁর জীবনের বড় একটা অপূর্ণতা হয়ে থেকে যাবে।
আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তীতে আরও একটি নতুন Blog নিয়ে শিঘ্রই আসছি আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত আল্লাহ্ সবাইকে ভালো রাখুক, সুস্থ রাখুক। আল্লাহ্ হাফেজ!!
No comments