Header Ads

Header ADS

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর 10 টি নদী ও লেক | Top 10 Most Dangerous Rivers and Lakes in the World

 


মানব সভ্যতা বিকাশের পেছনে নদীর অবদান যে কত তা বলে শেষ করা যাবে না। বড় বড় সব সভ্যতাই গড়ে উঠেছিলো নদ-নদীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এই নদীই রীতিমতো হুমকি হয়ে উঠতে পারে মানুষের জন্য। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর 10 টি নদী ও লেক নিয়ে থাকছে এবারের আয়োজন।


1.রিও টিন্টো নদী





স্পেনের রিও টিন্টো নদী। ওয়েলভা প্রদেশ থেকে জন্ম নেয়ার পর আন্দালুসিয়ার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে। রক্তবর্ণ নদীর পানি যতটা না আপনাকে অবাক করবে তার চেয়ে বেশি চমকে উঠবেন যখন জানবেন এই নদীর পানি কতটা ভয়ংকর। এই পানিতে উচ্চমাত্রার এসিডিটি থাকায় কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না এখানে। আশপাশের তামা, রুপা এবং স্বর্ণের খনি থেকে নির্গত বিভিন্ন ধাতুর বর্জ্য এই নদীর পানিতে মিশে এই অদ্ভুত রং এবং খুনে ক্ষমতার সৃষ্টি হয়েছে।


2.লেক ইজেন





ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশে অবস্থিত মাউন্ট মেরাপি আগ্নেয়গিরি। এর পাশেই রয়েছে ইজেন নামে আরেকটি মৃত আগ্নেয়গিরি। এই আগ্নয়েগিরি থেকে সৃষ্ট এক ধরনের সিংক হোল হচ্ছে এই লেক ইজেন। বিশ্বের সবেচেয়ে বিষাক্ত এবং খুনে লেক এটি। এই লেক আক্ষরিক অর্থেই মৃত, কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না এই লেকে। এর পানি এতটাই বিষাক্ত যে লেকের পাড়ে জন্মাতে পারেনি কোনো গাছ। এই লেকের পানিতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ঘনীভূত সালফিউরিক এসিড। যে কারণে এই লেকের পানিতে নামার কিছুক্ষণের মধ্যে জীবিত কোনো প্রাণী স্রেফ গলে যায়। আগ্নেয়গিরি সংলগ্ন একটি সালফারের খনির কারণে এই লেকের পানি এমন বিষাক্ত হয়ে পড়েছে।


3.ইয়াংসি নদী





প্রায় দেড় বিলিয়ন লোকের বাস চীনে বর্তমানে যে সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে তা হচ্ছে পরিবেষদূষনজনিত সমস্যা। এই পরিবেশদূষণের ভয়ংকর প্রভাব পড়েছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম নদী চীনের ইয়াংসি নদীতে। এই নদীর পাড় ধরে গড়ে উঠেছে ১৭ হাজারেরও বেশি বসতি। আর যেখানে আধুনিক পয়ঃনিষ্কাষণ সুবিধা নেই বেশিরভাগ বসতিতেই। মানুষের বর্জ্য, বিভিন্ন কলকারখানার দূষিত পদার্থ ইত্যাদি মিশে নদীর পানির স্বাভাবিক রংটাই বদলে গেছে। আর পানি যে কতটা দূষিত হয়ে পড়েছে তা বোঝা যায় এক সরকারি প্রতিবেদন থেকে, যেখানে বলা হয়েছে এই নদীর ধারে বসবাসরত মানুষজনও রয়েছেন উচ্চ মাত্রার স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।



4.আমাজন নদী





বিশাল, সুন্দর বা ভয়ংকর যে নামেই অভিহিত করুন, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী এবং অরণ্য আজো অনেক রহস্য ধরে রেখেছে। এই নদী যে শুধু বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পানি ধারণ করে তাই নয়, বিচিত্র সব প্রাণের ভাণ্ডার এই নদী। এদের অনেকেই এতটাই বিষাক্ত বা ভয়ংকর যে, যুগে যুগে বহু অভিযাত্রিকে পরাজিত হতে হয়েছে। হিংস্র কুমির, প্রকাণ্ড অ্যানাকোন্ডা, রাক্ষুসে পিরানহা বা ক্যান্ডারু নামে এক জাতের পরজীবী কিট, আমাজন নদীতে এর সবকিছুই হয়তো আপনাকে মোকাবেলা করতে হবে।



5.ফুটন্ত লেকঃ





ডমিনিকান রিপাবলিকের মর্নে টোয়া পিটনস ন্যাশনাল পার্কে রয়েছে এই অদ্ভুত লেকটি। ১৮৭০ সালে লেকটি আবিষ্কার করা হয়। এই লেকের পানি আক্ষরিক অর্থেই ফুটছে। লেকের প্রান্তে ফুটন্ত পানির তাপমাত্রা ৯২ ডিগ্রি পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিন্তু লেকের মাঝ বরাবর যেখানে পানি সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত সেখানকার তাপমাত্রা এখনো রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। অতিরিক্ত উষ্ণতার কারণে এই পানিতে কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না।



6. লেক অব নো রিটার্নঃ





মায়ানমার সরকারের এক তথ্যমতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রহস্যময় এই জলাভূমির কাছেই রসদ, কামান ও অস্ত্রশস্ত্র সমেত মুহূর্তের মধ্যে ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছিল মিত্রবাহিনীর বেশ কয়েকটি বিমান এবং সেসব বিমানের সৈন্য-সামন্ত, যাদের কোনো অস্তিত্বই পরবর্তীতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। উত্তর মায়ানমারের ঘন জঙ্গলেঘেরা এই লেকটির রহস্যময়তার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত দিতে পারেননি। সুতরাং ব্যাপার যে গোলমেলে, তা সহজেই অনুমেয়। মায়ানমারের সেই জলাভূমিকে নিয়ে প্রচলিত আছে প্রচুর গল্পগাঁথা।


7. খুনি হ্রদঃ





খুনি হ্রদ’ বা killer lake এর অবস্থান ক্যামেরুনে। এর আসল নাম NYOS হলেও স্থানীয় ভাবে এটা খুনি হ্রদ নামেই পরিচিত। হ্রদটি একটি মৃৎ আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের পাশে অবস্থিত। এটা লাভায় পরিপূর্ণ থাকলেও এর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় পানি এবং এর মধ্য থেকে নির্গত হয় কার্বন–ডাই-অক্সাইড। খুনি হ্রদ নাম হওয়ার পেছনে এর মূল কাহিনী হচ্ছে ১৯৮৬ সালের দিকে এই হ্রদের মধ্য থেকে কার্বন–ডাই-অক্সাইড এর বিশাল বুদবুদ বের হয় যা সালফার এবং হাইড্রজেনের সাথে মিশে বায়ুমণ্ডলে চলে যায়। এর পর হ্রদের চারপাশের ২৩ কিঃ মিঃ জুড়ে ছড়িয়ে পরে এই গ্যাস। আর এই গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় ১৭০০ লোক এবং ৩৫০০ গবাদি পশু মারা যায়। এর পর থেকেই এর হ্রদের নাম হয় খুনি হ্রদ।



8. শ্যাম্পেন লেকঃ





নামে যাই থাকুক, মোটেও শ্যাম্পেন দিয়ে পরিপূর্ণ লেক নয় এটা। এই লেকটি Newzeland এর Wai-O-Tapu তে অবস্থিত। Wai-O-Tapu জায়গাটি আবার রুটুরুয়া তে অবস্থিত। মাউরি ভাষা থেকে অনুবাদ করলে জানা যায় Wai-O-Tapu এর অর্থ হচ্ছে পবিত্র পানি অথবা রঙিন পানি আর রুটুরুয়া শব্দের অর্থ হচ্ছে কাহুমাতামমিও, যে ছিল লর্ড মারিওর চাচা যিনি এই অঞ্চলটি আবিষ্কার করেছেন। ছবিতে কমলা রঙের যে অংশটুকু দেখা যাচ্ছে এটা হলো গ্রাফাইড এর বিশাল ভাণ্ডার আর শ্যাম্পেনের মত বুদবুদ আকারে যে গ্যাস বের হচ্ছে তা হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড। এর জন্যে এই লেকটির নাম শ্যাম্পেন লেক।



9. বিয়ার লেক আরোরাঃ





বিয়ার লেক এর অবস্থান আলাস্কায়। এখানে আরোরা(Aurora) শব্দের অর্থ হচ্ছে বিয়ার লেক আকাশে মনোরম রঙিন আলোর খেলা। এটাকে উত্তরের আলোও বলা হয়। প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টি এই বিয়ার লেক আরোরা।বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে যে, সূর্য বায়ুর সাথে যখন পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সংঘর্ষ ঘটে তখনই এই রহস্যময় এই আলো খেলার সৃষ্টি হয়।



10. লেক আব্রাহামেঃ





কানাডার আলবার্তায় লেক আব্রাহামের দিকে চোখ ফেরালে মনে হয় নীল রঙের দৈত্যাকার জেলিফিশ জমাট বেঁধে আছে। অপরূপ সুন্দর এই লেক আসলে জমাট বাঁধা মিথেন গ্যাসের বুদবুদমাত্র। লেকের জলে গাছের পাতা থেকে শুরু করে মৃত প্রাণীর দেহাবশেষ ব্যাকটেরিয়া খেতে শুরু করলে অন্যরকম পরিস্থিতি দাঁড়ায়। মিথেন গ্যাস বের হতে হতে বুদবুদের আকার নেয়। তবে তা দাহ্য হওয়ায় এখানে কোনোভাবে আগুনের সামান্য ফুলকিতেও ভয়ানক বিস্ফোরণ ঘটে যেতে পারে।



এই ছিল আমাদের আজকের আয়োজন। কেমন লেগেছে আজকের এই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর 10 টি নদী ও লেক এপিসোডটি তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন । আর্টিকেল টি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করতে ভুলবেন না । পাশাপাশি আমাদের Facebook,Youtube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন আর ফেসবুকে আমাদের ফলো করুন । ধন্যবাদ সবাইকে ।  বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর 10 টি নদী ও লেক | Tazza Trendz

Follow Us:

 Facebook
 Youtube 


No comments

Powered by Blogger.