Header Ads

Header ADS

তুরস্কের থেকেও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ | ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত হও বাংলাদেশ!

 

তুরস্কের থেকেও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ |
ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত হও বাংলাদেশ!


যেকোনোও সময় জোরাল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠতে পারে বাংলাদেশ। আর তার বিপর্যয় তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পের বিপর্যয়কেও হার মানাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভূতত্ত্ববিদরা।

তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে যে ভূমিকম্প হয়েছে, সেটা সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলির মধ্যে অন্যতম বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

তুরস্কের কাহার মানমারাস শহরে আঘাত হানা ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প এরই মধ্যে সিরিয়াসহ ৩৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় লাখো মানুষ। এর মধ্যে কেবল তুরস্কেই নিহত হয়েছেন ৩১ হাজারের বেশি। আহত হয়েছেন প্রায় ৯০ হাজার। সব মিলিয়ে, গত ৬ ফেব্রুয়ারির এ ভূমিকম্প দেশটিতে  নরক নেমে এনেছে। যা রীতিমতো বিভীষিকা ছড়িয়েছে।

কিন্তু, এই বিভীষিকাময় ভূমিকম্পের থেকেও আরও বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ যেকোনোও সময় জোরাল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠতে পারে বাংলাদেশ। আর তার বিপর্যয় তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পের বিপর্যয়কেও হার মানাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভূতত্ত্ববিদরা।

এখন প্রশ্ন হলো- কেন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ?

জানা গিয়েছে যে, গোটা পৃথিবী তরল পদার্থের উপর ভাসমান ৭টি বড় ও ৩০টির বেশি প্লেটের মধ্যে দাঁড়িয়ে। এই প্লেটগুলির মধ্যে তারতম্য ঘটলে বা সংঘর্ষ ঘটলেই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশ তিনটি প্লেট- বার্মিজ, ইউরেশিয়ান ও ইন্ডিয়ান প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত। এগুলির মধ্যে বাংলাদেশের পূর্বে রয়েছে বার্মিজ প্লেট, উপরে ইউরেশিয়ান প্লেট ও পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট। 

একেবারে ভারতের পাশে বার্মিজ ও ইন্ডিয়ান প্লেট রয়েছে এবং এই দুটি প্লেটের মধ্যে ইতিমধ্যে তারতম্য ঘটতে শুরু করেছে। আর এই দুটি প্লেট থেকে দীর্ঘদিন কোনও শক্তি নির্গত হয়নি। ফলে এই দুটি প্লেটের মধ্যে যে পরিমাণ শক্তি রয়েছে, বড় ধরনের তারতম্য ঘটলে সেই বিপুল শক্তি নির্গত হবে এবং তার ভয়াবহতা তুরস্ক-সিরিয়া বিপর্যয়ের থেকে অনেক বেশি হবে। ৮.২ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে।

ভূমিকম্পের ভয়াবহতার কারণ ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশের এক বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ জানান, বার্মিজ ও ইন্ডিয়ান প্লেট সুমাত্রা দ্বীপের পাশ দিয়ে আন্দামান হয়ে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজার কি.মি বিস্তৃত। এই প্লেট দুটির মধ্যবর্তী স্থান হল ডাউকি ফল্ট। আর এর দুপাশে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হিসাবে সুনামগঞ্জ থেকে জাফরং ও সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দুটি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। 

এই দুটি জোনের মধ্যে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার জোন বর্তমানে বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। কেননা এই জোনে ক্রমশ ইন্ডিয়ান প্লেট তলিয়ে যাচ্ছে এবং বার্মিজ প্লেট পুরো শক্তি নিয়ে পশ্চিমে ধাবিত হচ্ছে। যা ভয়ঙ্কর। ফলে যে কোনও সময় এই জোনে ভূমিকম্প হতে পারে। আর প্লেট দুটির মধ্যে যে শক্তি সঞ্চিত রয়েছে, তা ৮.২ মাত্রার শক্তি নিয়ে কম্পন ধরাতে পারে।

বাংলাদেশ  ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে আছে, সে কথা বার বার বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সত্যি সত্যি সেই বিপদ এলে কী ঘটবে, সে বিষয়ে আশাব্যাঞ্জক কিছু শোনাতে পারছেন না তারা।

তবে কেবল বাংলাদেশ নয়, ভারত সহ বিশ্বের অনেক দেশই বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গ্লোবাল সিসমিক সংস্থার মানচিত্র অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, চীন, জাপান, তুরস্ক, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও চিলি বড় ঝুঁকির মধ্যে আছে।

অবশেষে এটাই বলবো যে, ভূমিকম্প এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ উওম পরিকল্পনাকারী।

No comments

Powered by Blogger.